
নিজস্ব প্রতিবেদক,
সাতক্ষীরা সাতক্ষীরা জেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যোগদানের পর থেকেই একজন আদর্শিক ও নীতিবান কর্মকর্তার নাম এখন আলোচনার তুঙ্গে। তিনি আর কেউ নন, বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রার অমায়িক বাবু। তবে তার এই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু কোনো অনিয়ম নয়, বরং তার আপসহীন সততা। আর এই সততাই এখন তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালী দালাল সিন্ডিকেট ও দুর্নীতির সুবিধাভোগীদের কথা না মানায় তাকে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ ও ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, অমায়িক বাবু সাতক্ষীরায় যোগদানের পর থেকেই অফিসের চিরচেনা দুর্নীতির চিত্র পাল্টে যেতে শুরু করে। বিশেষ করে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানিমুক্ত সেবা দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে দীর্ঘদিনের সক্রিয় একটি অসাধু চক্র। তাদের অন্যায্য আবদার পূরণ না করায় এবং সিন্ডিকেটের খবরদারি বন্ধ করে দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগের জাল বোনা হচ্ছে।
সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তোলা হলেও এর কোনোটিরই বাস্তব ভিত্তি পাওয়া যায়নি। এমনকি অডিও বা ভিডিওর মতো কোনো অকাট্য প্রমাণ ছাড়াই তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চলছে। কিছুদিন আগে একটি অভিযোগ তদন্ত করা হলেও সেখানে সুনির্দিষ্ট কোনো সত্যতা মেলেনি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তার পুরো চাকরি জীবনে কোনো দুর্নাম বা বিভাগীয় শাস্তির রেকর্ড নেই; বরং অত্যন্ত সুনামের সাথেই তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
সাতক্ষীরা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের বর্তমান পরিবেশ নিয়ে সাধারণ সেবাগ্রহীতাদের সাথে কথা বললে তারা জানান।
অফিসের কর্মচারী “এমন নীতিবান অফিসার সাতক্ষীরায় আগে আসেনি। তিনি আমাদের অফিসের কাজের স্বচ্ছতা বাড়াতে মাউথ স্পিকার এবং সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন, যাতে কেউ গোপনে লেনদেন করতে না পারে।”
সাধারণ সেবাগ্রহীতা “আগে এখানে দালালের কাছে না গেলে কাজ হতো না। এখন সরাসরি অফিসারের সাথে কথা বলা যায় এবং ন্যায্য নিয়মেই কাজ হচ্ছে।”
এ বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করা হলে অমায়িক বাবু অত্যন্ত আস্থার সাথে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “আমি চাকরি জীবনে সবসময় সততা ও স্বচ্ছতাকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। এই দালাল সিন্ডিকেট ভাঙতে গিয়েই আজ আমাকে এই বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, আমার বিরুদ্ধে যদি কোনো দুর্নীতি বা অনৈতিক কাজের অডিও-ভিডিও প্রমাণ থাকে, তবে আপনারা তা প্রচার করুন। কিন্তু প্রমাণ ছাড়া ভিত্তিহীন খবর প্রকাশ করে একজন সরকারি কর্মকর্তার সম্মানহানি করবেন না।”
সাতক্ষীরা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ডিজিটাল মনিটরিং ব্যবস্থা এবং সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত করার পদক্ষেপটি মূলত দুর্নীতিবাজদের গাত্রদাহের প্রধান কারণ। যখন একজন কর্মকর্তা সিস্টেমকে স্বচ্ছ করতে চান, তখন স্বার্থান্বেষী মহলের অস্তিত্ব সংকটে পড়ে। অমায়িক বাবুর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, একজন সৎ কর্মকর্তাকে যেন মিথ্যা ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করা হয়, যাতে ভবিষ্যতে অন্য কর্মকর্তারাও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করতে উৎসাহিত হন।