
নিজস্ব প্রতিবেদক
সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলায় পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত এক শক্তিশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সাংবাদিক মেহেদী হাসানকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, এবং নতুন নতুন মামলায় জড়ানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ওসি, এক এসআই ও উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতির বিরুদ্ধে।
অভিযোগকারী সাংবাদিক মেহেদী হাসান জানান, তিনি শ্যামনগর থানার সাবেক ওসি মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্লা এবং এসআই জহুরুল ইসলামের কোনো পূর্ববর্তী নিউজ না করেও শুধুমাত্র এলাকার সত্য ঘটনা ও দুর্নীতির রিপোর্ট করায় টার্গেটে পরিণত হন। ক্ষুব্ধ হয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁকে একটি মিথ্যা ‘চাঁদাবাজি’ মামলায় জড়িয়ে দেন।
এই মিথ্যা মামলায় তিনি কারাবরণ করেন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সাংবাদিক মেহেদী হাসান সাহস করে সাবেক ওসি হুমায়ুন কবির মোল্লা ও এসআই জহুরুল ইসলামের অবৈধ কর্মকাণ্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
ওসি-এসআইয়ের বিরুদ্ধে নিউজ করার পরই সাংবাদিক মেহেদী হাসানকে ফোনে হুমকি ও গালাগালি শুরু হয়।
শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সামিউল ইসলাম মনির প্রথমে সাংবাদিক মেহেদী হাসানকে মুঠোফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
এরপর এসআই জহুরুল ইসলামও ফোন করে অনুরূপ ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেন।
সাংবাদিক মেহেদী হাসানকে ভবিষ্যতে আরও বহু মামলায় জড়ানো হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।
এই অডিও ক্লিপগুলো গণমাধ্যম ও নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হলে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। মেহেদী হাসান নিশ্চিত করেন, এই গালিগালাজ এবং মামলায় জড়ানোর হুমকি তাঁর পরিবারকে নিয়েও করা হয়েছে, যা পুলিশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করেছে।
বিভিন্ন সূত্র ও অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক ওসি হুমায়ুন কবির মোল্লা এবং প্রেসক্লাবের সভাপতি সামিউল ইসলাম মনিরের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগসাজশ বিদ্যমান। অভিযোগ উঠেছে
শিক্ষক পরিচয়ের আড়ালে থাকা সামিউল ইসলাম মনির প্রেসক্লাবের পদ ব্যবহার করে শ্যামনগরের সীমান্ত ও উপকূলীয় এলাকার মাদক চোরাকারবারী ও অবৈধ কারবারিদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা নিতেন।
সংগৃহীত এই অবৈধ অর্থের একটি বড় অংশ তিনি সাবেক ওসি হুমায়ুন কবির মোল্লাকে দিতেন।
এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বলা বা নিউজ করলেই মনির তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী এবং পুলিশি প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতেন।
মিথ্যা মামলা, কারাবরণ এবং প্রকাশ্য হুমকির শিকার সাংবাদিক মেহেদী হাসান বর্তমানে চরম জীবন নাশের হুমকিতে ভুগছেন। তিনি আশঙ্কা করছেন, এই চক্র যেকোনো মুহূর্তে তাঁর বা তাঁর পরিবারের ওপর হামলা চালাতে পারে।
সাংবাদিক মহল এই পুরো ঘটনার একটি উচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে। তারা মনে করেন, এই ধরনের সিন্ডিকেট সাংবাদিকতার স্বাধীনতা এবং এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য চরম হুমকি।