
শহিদুল ইসলাম, জামামোঃলপুর,প্রতিনিধি
জীবিকার একমাত্র অবলম্বন মাসকালাই ক্ষেত এখন ভস্মীভূত। বিষাক্ত হয়ে হলুদ হয়ে যাওয়া ক্ষেতের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না নারী-পুরুষরা। মাঠজুড়ে কেবল হাহাকার। যেন দিনের আলোতেই অন্ধকার নেমে এসেছে।
এমন হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চর আমখাওয়া ইউনিয়নের বাউলপাড়া গ্রামে। জমি দখলকে কেন্দ্র করে প্রতিহিংসার জেরে প্রতিপক্ষ রাতের অন্ধকারে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ৯৭ শতক জমির মাসকালাই ফসল সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে।
ভুক্তভোগী কৃষক মোঃ মাসুদ মিয়া বলেন, “পূর্ব শত্রুতার জেরে রাতের আধারে আমার ৯৭ শতক জমির মাসকালাই ক্ষেতে বিষ প্রয়োগ করে নষ্ট করেছে একই গ্রামের জুয়েল, রাজু, সাদা, মধু, ছুটন, বিপ্লবসহ আরও কয়েকজন। এই জমি আমি ও আমার শ্যালকের স্ত্রী মোছাঃ আইশা সিদ্দিকা ক্রয়সূত্রে মালিক হয়েছি। এখানে আগেও তিল চাষ করেছিলাম, এবার মাসকালাই চাষ করি। ফসল বড় হয়ে ফুল আসছিল। হঠাৎ করে তারা বিষ ছিটিয়ে সবকিছু শেষ করে দিল। এতে প্রায় ১ লাখ টাকার ক্ষতি হলো। এখন পরিবার নিয়ে দিশেহারা অবস্থায় আছি।”
শুধু মাসুদ মিয়াই নয়, তার ক্ষতিতে কেঁদে উঠেছে আশপাশের কৃষকরাও। প্রতিবেশী কৃষক মোঃ আপেল বলেন, “আমরা নিজের চোখে দেখেছি ক্ষেতের সবুজ ফসল কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হলুদ হয়ে শুকিয়ে মরছে। কৃষক পরিবারগুলোর অবস্থা খুব খারাপ। এই এক ফসলের উপর তাদের সংসার চলে। ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা এখন নিঃস্ব।”
আরেক কৃষক মোঃজমসের আলী জানান, “আমাদের এলাকায় জমির জন্য দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছে। প্রতিপক্ষরা নানা সময় ভয়ভীতি দেখাত। এবার সরাসরি ফসলের ক্ষতি করলো। গরিব কৃষকের সর্বনাশ করে তারা নিজেরা লাভবান হতে চায়।”
এখন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারগুলো প্রশাসন ও সরকারের জরুরি সহযোগিতা কামনা করছে। তাদের দাবি, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক, যেন ভবিষ্যতে আর কোনো কৃষকের ঘরে এভাবে অন্ধকার নেমে না আসে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যাক্তিদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন বিষয় গুলো মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নাজমুল হাসান বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থল তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
মোঃশহিদুল ইসলাম
জামালপুর
০১৭৬৩৯৮৪৪৪