
শামীম আহমেদ পাবনা জেলা প্রতিনিধি:–
প্রশাসনের কাজ শুধু অফিসে বসে কাগজপত্র সই করা নয়—এটিই আবারও প্রমাণ করলেন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রিজু তামান্না।
সম্প্রতি এক সাধারণ ভ্যানচালক অফিসে সমস্যা নিয়ে এসে ইউএনও ম্যাডামের সামনে কেঁদে ফেলেন। সেই মুহূর্তটি ছিল আবেগঘন। ইউএনও তার সমস্যার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং সহানুভূতি জানান।
আজ কাশিনাথপুরের এদ্রাকপুর মাদ্রাসা পরিদর্শনের সময় হঠাৎ সেই ভ্যানচালক আবার হাজির হন। কাছে এসে বললেন—
ম্যাডাম, আমাকে চিনতে পারছেন? আমি একদিন আপনার অফিসে গিয়েছিলাম।”
ইউএনও হেসে জবাব দেন—
“জি, চিনতে পেরেছি।”
ভ্যানচালক জানান, তার বাড়ি সেখানেই এবং তার স্ত্রী ইউএনওকে দেখতে চায়। একান্ত অনুরোধে ইউএনও তার বাড়িতে যান।
গ্রামের সাধারণ ঘরে ইউএনওর আগমন ছিল এক অন্যরকম দৃশ্য। ভ্যানচালক ও তার পরিবারের চোখেমুখে আনন্দ আর অবিশ্বাসের মিশেল। তাদের বাড়িতে তেমন কিছু নেই, কিন্তু আন্তরিক আতিথেয়তায় ইউএনও মুগ্ধ হন।
ইউএনও রিজু তামান্না বলেন—
আমরা সমাজে যারা ভালো অবস্থায় আছি, আমরা অনেক দামি পোশাক পরি। আমার একটি ড্রেসের দামে হয়তো তার পুরো পরিবার চলে। এই মানুষগুলোর কথা ভাবলে সত্যিই কষ্ট হয়। সমাজে অনেক কিছু করার আছে—এটা আমরা কজন ভাবি?”
তিনি আরও জানতে চান, তিনি সরকারি কোনো সুবিধা পান কিনা। উত্তরে ভ্যানচালক জানান, কোনো ধরনের সরকারি সহায়তা তিনি পাননি। ইউএনও তখন স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে প্রশ্ন তোলেন—
আপনাদের এলাকার এই মানুষগুলো কি আপনাদের চোখে পড়ে না?”
এই সফর শুধু একটি পরিবারের জন্য নয়, পুরো গ্রামবাসীর জন্য ছিল গর্বের মুহূর্ত। মানবিক প্রশাসক হিসেবে ইউএনও রিজু তামান্নার এ ধরনের উদ্যোগ সমাজে এক অনুপ্রেরণার দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।