
ডেক্স নিউজ
সাতক্ষীরার শ্যামনগরের জয়াখালী গ্রামে জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসারের দেওয়া এক বিতর্কিত রায়ের ফলে প্রায় ৩০ জন গ্রামবাসী তাদের বসতভিটা হারানোর শঙ্কায় পড়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, কোটি টাকার বিনিময়ে আইন লঙ্ঘন করে অন্যের জমি ও বাড়িঘর ভুয়া বাদীর নামে রেকর্ড করে দিয়েছেন জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার রাজিব আহাম্মেদ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এসএ ম্যানুয়াল ১৯৩৫ এর ৫৩৩ ধারা মোতাবেক ‘জালিয়াতি এন্ট্রি সংশোধনের’ কথা থাকলেও জয়াখালীর কৈখালী মৌজা এখনও সরকারিভাবে পাবলিষ্ট হয়নি। এর আগেই “মিস মামলা নং-৮২৭/২৪”-এ একতরফা রায়ে রেকর্ড পরিবর্তন করে আলাদা খতিয়ান খোলা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এটি যেন “বিয়ে হওয়ার আগেই সন্তানের জন্ম” দেওয়ার মতো ঘটনা।
অভিযোগ অনুযায়ী, জয়াখালী গ্রামের মৃত আহমদাদ গাজীর ছেলে মোজাদ্দীদ দিং-এর দীর্ঘ ৬০ বছরের দখলীয় বাড়ি (দাগ নং ৪৯৩৬) অন্যের নামে রেকর্ড করে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে হাফিজুরের বাড়ি শহিদের নামে, আমিরুলের বাড়ি মজিদের নামে, শহিদুলের বাড়ি খয়রাতের নামে রেকর্ড করা হয়েছে। এমনকি মৃত ব্যক্তিদের বাদী সাজিয়েও রায় দেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় ৩৫-৪০ জনের ঘরবাড়ি অন্যের নামে চলে গেছে।
ভুক্তভোগী মোজাদ্দীদ ও আমিরুল জানান, সেটেলমেন্ট অফিসের পিয়ন জাকির স্থানীয় কয়েকজন দালালের সহায়তায় কোটি টাকা তুলে অফিসার রাজিব আহাম্মেদকে ঘুষ দিয়েছেন। এর ফলেই এই ‘বেআইনি’ রায় এসেছে। তারা অভিযোগ করেন, “আমাদের দখল আছে, কাগজ আছে। কিন্তু মৌজা পাবলিষ্ট হওয়ার আগেই এভাবে রেকর্ড দেওয়ায় আমরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি।”
গ্রামবাসীর আশঙ্কা, এই রায়ের কারণে এলাকায় ব্যাপক অশান্তি ও দাঙ্গা সৃষ্টি হতে পারে। স্থানীয়দের দাবি, বৃটিশরা যেমন চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আইন দিয়ে জনগণকে শোষণ করেছিল, আজ তেমনি সেটেলমেন্ট অফিস চিরস্থায়ী দাঙ্গার ফাঁদ তৈরি করছে।
ভুক্তভোগীরা ইতিমধ্যে এই রায়ের বিরুদ্ধে ডিজি সেটেলমেন্টের কাছে অভিযোগ করেছেন এবং রায় বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।