
মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন শ্যামনগর উপজেলা ক্রাইম রিপোর্টার
সুন্দরবন সীমান্তবর্তী উপকূলবর্তী এলাকায় বসবাসরত মানুষদের জীবন আজ নিঃসঙ্গ ও সংগ্রামী। তাদের একমাত্র আশ্রয় — নদী ভেসে আসা ফলমূল, লতা, গাছের ডালপালা ও শুকনো পাতা সম্বলিত জ্বালানি। জনশ্রুতি রয়েছে, গ্যাস বা কয়লা কেনার সামর্থ্য আমাদের নেই, — বলছেন আব্দুর রাজ্জাক নামে একজন স্থানীয়।
নদীর ঢেউ ও জোয়ারে সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী বনগুলো থেকে গরান, গেওয়া, পশুর, ধুন্দল ও অন্যান্য ম্যানগ্রোভ গাছের ফল ঝরে পড়ে। এসব ফল পানিতে ভেসে আসে এবং উপকূলীয় মানুষ সেগুলো সংগ্রহ করে রোদে শুকিয়ে খড়ের মতো জ্বালানির উপাদান বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এই পদ্ধতি শুধু জীবিকা নয় — বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গরীব মানুষ গ্যাস-কেয়লা কিনে ব্যবহার করতে পারি না। এই ফলগুলোর ওপরই নির্ভর করে আমাদের রান্না-ঝরাপাত।এ কথা শুনে বোঝা যায়, একারনে তারা অনুন্নত জীবিকার অবলম্বন করছে।
এক স্থানীয় নারী জানান, ফলগুলো সংগ্রহ করতে ঝুড়ি এবং নেট জাল ব্যবহার করি। ছুলে শুকিয়ে লোহা-কয়লার মতো অবস্থায় আসলে রান্না ও চুলায় ব্যবহার করি।কেউ কেউ এই ফল বিক্রি করে সামান্য অর্থ উপার্জনও করেন।
একজন যুব বললেন, আমরা ফল শুকাই না — জীবন সাজাই কষ্ট দিয়ে কিন্তু মানবিক সহায়তা দিন।
সরকার ও বন বিভাগের দ্রুত হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তারা।
মানবাধিকারের সংগঠনগুলোর কাছে দাবি — নতুন বিকল্প জ্বালানির ছাড়া, সরকারি গ্যাসের সুবিধা, প্যাকেট কয়লা সরবরাহ ইত্যাদি।
একটি সমন্বিত প্রকল্প প্রস্তাব করতে হবে — স্থানীয়ভাবে ফলের ব্যবহার সীমাবদ্ধ রাখতে এবং বনবৃদ্ধি বজায় রেখে বিকল্প দিতে হবে।
জনগণ এখন শুধু ভেসে আসা ফল নয়, একটি নতুন প্রতিরোধ ও অধিকার দাবি করছেন।
অপরিকল্পিত বন ক্ষয় ও জীবিকা হানির মাঝেও তারা দাঁড়িয়ে আছে — লড়ছে, সহ্য করছে, বেঁচে থাকার একমাত্র আশা নিয়ে।
তবে এই প্রক্রিয়াকে শুধু নিরাপদ বলা যায় না। বন বিভাগের কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, অনেক সময় এসব ফল সংগ্রহ প্রকৃত বনবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করে।
স্থানীয়রা বলছেন, ২০ দিন, ২৫ দিন, এমনকি মাস খানেকও তারা নির্ভর করে এই ফলসামগ্রীতে। কোনো বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা না থাকায় এদের জীবন আজ গভীর অস্থিরতায়।
এক বৃদ্ধ সদস্য বলেন, আমরা শুধু ফল শুকাই না—এটাই আমাদের গোপন কয়লা। যে কয়লা কিনে বাজার থেকে আনতে পারতেন না, সেই ফল আজ জীবিকার উপাদান।
এই পরিস্থিতি শুধু এক গ্রামের নয় — পুরো উপকূলজুড়ে প্রায় হাজার হাজার পরিবার একইভাবে জীবনযাপন করছেন।
এ বিষয়ে বন বিভাগ একজন কর্মকর্তা জানালেন, আমরা নিয়মিত ব্যক্তিদের সতর্ক করি, বনভূমির অংশ বাদ দিয়ে কাজ করতে বলি। কিন্তু বাস্তবে তাদের প্রতিফল পাওয়া যায় কম।
এক্সপোর্ট বা বাণিজ্যিকভাবে ফল ব্যবহার আইনত নিষিদ্ধ হলেও, মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার সংগ্রাম এত বেশি যে আইন উলংঘন তারা বাধ্য হয়ে করে নিচ্ছে।
ইউপি সদস্য তাঁরা বলছেন, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে জ্বালানি প্রকল্প বা বিকল্প দেয়া জরুরি। মানুষের এই সংগ্রাম এমন ভাবে চলতে পারে না।
স্থানীয়NGO-ও এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে — কিছু বরাদ্দ চালান দেওয়া হচ্ছে, তবে বড় প্রাসঙ্গিক সহায়তা এখনও শুরু হয়নি।
এই সময়, অনেক পরিবার অকূল পাথরে পদ্মাসুর পরিস্থিতির মুখে পড়েছে।
ক্ষুধা ও ঠাণ্ডার মধ্যে, বৃষ্টিতে ভিজে এবং তাপে পুড়ে চলেছে তাদের জীবন। শিশুরা স্কুলেও যেতে পারছে না।