মোঃ ফারুক হোসেন, শ্যামনগর উপজেলা প্রতিনিধি।
সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলাকে সুন্দরবনের প্রধান প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই অঞ্চলের বুক চিরে চলে যাওয়া সাতক্ষীরা-শ্যামনগর সড়কপথটি এখন পর্যটকদের কাছে এক নতুন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বিশেষ করে শীতকাল শুরু হতেই এই সড়কে পর্যটকদের ভিড় চোখে পড়ার মতো।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ
প্রায় ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটি শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি যেন সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্যের এক ক্ষুদ্র চিত্র। সড়কটির দু'পাশে থাকা ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের এবং খানিক দূরে চোখে পড়া ম্যানগ্রোভ বনের সবুজ রেখা পর্যটকদের মুগ্ধ করে। শ্যামনগর উপজেলা সদর থেকে মুন্সিগঞ্জ ও কদমতলা পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য এই সড়কই মূল ভরসা। এখান থেকে সহজেই সুন্দরবনের বিভিন্ন স্পট, যেমন - মুন্সিগঞ্জের আকাশলীনা, কলাগাছিয়া ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র, এবং দোবেকী-টাওয়ারের মতো স্থানগুলোতে নৌপথে যাওয়া যায়।
পর্যটন খাতের উন্নতি
স্থানীয়দের মতে, সড়কটির অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে এখন ঢাকা, খুলনা ও অন্যান্য দূরবর্তী স্থান থেকে পর্যটকরা সহজেই এখানে আসতে পারছেন। আগে যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় অনেক পর্যটকই নিরুৎসাহিত হতেন। সড়কপথের উন্নতির কারণে স্থানীয় হোটেল, মোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতেও ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্যামনগরের বিভিন্ন ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রগুলো নতুন করে সেজে উঠেছে পর্যটকদের বরণে।
স্থানীয়রা জানান, "শ্যামনগর সড়কটি এখন অত্যন্ত মসৃণ। ট্যুরিস্টরা সকালে এসে দিনের দিনও সুন্দরবনের কিছু অংশ ঘুরে যেতে পারছেন। বিশেষ করে কদমতলা এবং মুন্সিগঞ্জ ঘাটে পর্যটকদের চাপ এখন অনেক বেশি,চ্যালেঞ্জ ও প্রত্যাশা
তবে, পর্যটকদের বাড়তি ভিড়ের সঙ্গে কিছু চ্যালেঞ্জও সৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তার পাশে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা, সড়কে মাঝে মাঝে যানবাহনের জট এবং অপর্যাপ্ত বিশ্রামাগারের অভাব এখনও বিদ্যমান। পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা।
আশা করা হচ্ছে, এই সড়কপথকে কেন্দ্র করে সুন্দরবন সংলগ্ন এই অঞ্চলে পরিবেশবান্ধব পর্যটন ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে এবং এটি জাতীয় পর্যটন মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নেবে।