পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর ভিডিও প্রচার করে প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা
সাতক্ষীরায় আলোচিত লেডি ডাকাত মাছুরা বেগম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা এবং ব্ল্যাকমেলের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, সম্প্রতি তারা জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মিথ্যা ও মানহানিকর ভিডিও প্রকাশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মাছুরা ও তার সহযোগীরা সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার অফিসার ইনচার্জ ও কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর ভিডিও ও পোস্ট প্রচার করছে। উদ্দেশ্য, প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মানহানি ঘটিয়ে নিজেদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাওয়া।
সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কালিগঞ্জ উপজেলার মধুসূদন কর্মকারের বাড়িতে সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় মাছুরা বেগমের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। তার মোবাইল ডিভাইসে প্রমাণ মেলায় পুলিশ তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, ডাকাতির সময় চুরি হওয়া প্রায় ১০ ভরি স্বর্ণ সাতক্ষীরা শহরের একটি দোকানে বিক্রির চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু দাম কম বলায় পরে শ্যামনগরে বিক্রি করেন। পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সাতক্ষীরা শহরের জামায়াত অফিস সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসা থেকে মাছুরা ও তার সহযোগীরা জেলার বিভিন্ন স্থানে চুরি, ডাকাতি, ব্ল্যাকমেল ও মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছে। নিজে শ্রমিক লীগ নেত্রী ও মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা ও ব্ল্যাকমেলের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জন করছেন। অভিযোগ রয়েছে, অপরাধ সংঘটনের সময় তারা “চেতনা নাশক ওষুধ” ব্যবহার করে থাকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাছুরা বেগম (৩২) ভেটখালি এলাকার কুখ্যাত চোর সুবানের স্ত্রী। কিছুদিন আগে শ্যামনগর বিআরটিসি কাউন্টারের মালিক মতির সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে সুন্দরবনের ডাকাতদের জন্য ইয়াবা সরবরাহের সময় শ্যামনগর থানা পুলিশ তাদের আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
তদন্তে আরও জানা গেছে, মাছুরা বেগমের বাবা আবু বক্কর, ভাইসহ পরিবারের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধেও মাদক ও চুরির একাধিক মামলা রয়েছে। মামা রেজাউল ও রফিকুলের বিরুদ্ধেও সাতক্ষীরার বিভিন্ন থানায় চুরি, ডাকাতি ও চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মাছুরা বেগম অতীতে নাসির উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেল করে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন। ব্যর্থ হয়ে তিনি ২০১৮ সালে তার বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করেন, যা পরবর্তীতে আদালত খারিজ করে দেন।
এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন—মাছুরা বেগমের মোবাইল কললিস্ট পরীক্ষা করে তার সহযোগীদের শনাক্ত ও তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে চুরি, ডাকাতি ও মাদক ব্যবসাসহ সকল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।