নিজস্ব প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাংবাদিক মেহেদী হাসানকে ফোনে সপরিবারে লাঞ্ছিত করা, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ওই পুলিশ কর্মকর্তার ধমক ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে অডিও ফাঁসের পরও অভিযুক্ত এই পুলিশ কর্মকর্তা এখনো বহাল তবিয়তে কর্মস্থলে থাকায় জেলাজুড়ে সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
পেশাদারিত্বের সীমা লঙ্ঘন ও চরম ঔদ্ধত্য
ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপটিতে শোনা যায়, এসআই জহুরুল ইসলাম সাংবাদিক মেহেদী হাসানকে লক্ষ্য করে অত্যন্ত নিচু মানের ও কুরুচিপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করছেন। একজন সরকারি কর্মচারী হয়েও একজন গণমাধ্যমকর্মীকে 'মিথ্যা মামলায় জেল খাটানো' এবং তার পরিবার নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার ঘটনায় পুলিশের পেশাদারিত্ব নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় কোনো সাংবাদিকের সাথে এ ধরনের আচরণ সরাসরি স্বাধীন সাংবাদিকতার টুঁটি চেপে ধরার শামিল বলে মনে করছেন স্থানীয় সুশীল সমাজ। আস্থার সংকটে পুলিশ বাহিনী
সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার ভরসাস্থল হওয়ার কথা থাকলেও এসআই জহুরুলের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ বাহিনীর ভাবমূর্তিকে তলানিতে নিয়ে ঠেকিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলেছেন, "প্রকাশ্য অডিও রেকর্ডে অপরাধের প্রমাণ পাওয়ার পরও কেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নীরব?" কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় সাধারণ মানুষের মধ্যে পুলিশের প্রতি দীর্ঘদিনের আস্থা ও বিশ্বাস টালমাটাল হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগীদের মতে, বিচারহীনতার এই সংস্কৃতিই নিচুতলার কিছু পুলিশ সদস্যকে বেপরোয়া করে তুলছে।
সাংবাদিক মেহেদী হাসানকে হেনস্তা ও তার পরিবারের অবমাননার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ। সাতক্ষীরার বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, "পুলিশ জনগণের সেবক, শাসক নয়। এসআই জহুরুলের মতো অফিসাররা বাহিনীর জন্য বোঝা। অবিলম্বে তাকে ক্লোজ করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু না করলে কঠোর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে।"
সাতক্ষীরার সচেতন নাগরিকরা অবিলম্বে অভিযুক্ত এসআই জহুরুল ইসলামকে শ্যামনগর থানা থেকে প্রত্যাহার এবং যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, জনগণের সেবক হিসেবে পুলিশের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে হলে এমন অপেশাদার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা জরুরি।