নিজস্ব প্রতিবেদক,
সাতক্ষীরা আইন বহির্ভূতভাবে জমি রেজিস্ট্রি করতে রাজি না হওয়ায় সাতক্ষীরা সদর সাব-রেজিষ্ট্রার অমায়িক বাবুর বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলার খবর পাওয়া গেছে। একটি কুচক্রী মহল তাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলেও সম্প্রতি তদন্তে নিজের সততা ও পেশাদারিত্বের প্রমাণ দিয়েছেন তিনি।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, এস. এম. জুলফিকার আলী জিন্নাহ নামক এক ব্যক্তি আইনের তোয়াক্কা না করে একটি অবৈধ দলিল সম্পাদনের জন্য সাব-রেজিষ্ট্রারকে দীর্ঘ দিন চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। গত ১৬ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে তিনি জনৈক মোকসেদুর রশিদের অনুপস্থিতিতে একটি 'অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি' দলিল দাখিল করেন।
নিবন্ধন আইন, ১৯০৮-এর ধারা ৩৪(১) অনুযায়ী, দাতার সশরীরে উপস্থিতি ছাড়া দলিল রেজিস্ট্রেশনের কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া সংশ্লিষ্ট জমির মালিকানা নিয়ে বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ আদালত ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একাধিক মামলা (দেওয়ানী মোকদ্দমা নং ৬৯/২০১৯ এবং মিস আপীল নং ৯২/২০২৫) চলমান থাকায় জমিটি এই মুহূর্তে হস্তান্তরযোগ্য নয়।
তদন্তে দেখা গেছে, দলিলের দাতা মোকসেদুর রশিদ মন্ডল একজন ভারতীয় নাগরিক। ভারতীয় সরকারি ওয়েবসাইট যাচাই করে তার নাগরিকত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫১ এবং সংবিধানের ৪২(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কেবলমাত্র বাংলাদেশের নাগরিকরাই সম্পত্তি ধারণ বা হস্তান্তরের অধিকার রাখেন। ফলে একজন ভারতীয় নাগরিকের জমি রেজিস্ট্রি করা সম্পূর্ণ অবৈধ ও রাষ্ট্রবিরোধী।
সাতক্ষীরা সদর সাব-রেজিষ্ট্রার হিসেবে অমায়িক বাবু যোগদানের পর থেকে অফিসের দালাল সিন্ডিকেট নির্মূলে কঠোর পদক্ষেপ নেন। তিনি পুরো অফিস এলাকা সিসি ক্যামেরা ও অডিও রেকর্ডিংয়ের আওতায় নিয়ে আসেন, যার ফলে অনিয়ম ও অবৈধ লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দালাল চক্র ও স্বার্থান্বেষী মহল তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তদন্তের মুখে ঠেলে দেয়।
সম্প্রতি যশোর জেলা রেজিষ্ট্রার আবু তালেব এই অভিযোগের তদন্ত করেন। তদন্তকালে সাব-রেজিষ্ট্রার অমায়িক বাবু প্রতিটি আইনি পয়েন্টের সপক্ষে প্রমাণ ও সন্তোষজনক জবাব পেশ করেন। প্রমাণিত হয় যে, তিনি কেবল আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতেই দলিলটি রেজিস্ট্রি করতে অপরাগতা প্রকাশ করেছিলেন।
এ বিষয়ে সাব-রেজিষ্ট্রার অমায়িক বাবু বলেন, "আমি আইন ও সংবিধান অনুযায়ী আমার দায়িত্ব পালন করছি। কোনো অনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করিনি বলেই আমার বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আমার লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছি এবং সত্য প্রকাশিত হয়েছে।"
সাতক্ষীরার সচেতন মহল মনে করছেন, এমন একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ হওয়া প্রয়োজন এবং যারা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সরকারি কাজে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।