পটুয়াখালী জেলা বাউফল উপজেলা প্রতিনিধী: মোঃ ফারুক হোসেন মৃধা
পটুয়াখালীর বাউফলে দীর্ঘদিনের প্রেমিকের দ্বারা ধোঁকা ও শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে ক্ষুব্ধ এক তরুণী পটুয়াখালীর বাউফলে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন। এবারই দ্বিতীয়বারের মতো তিনি এমনটি করলেন। এ ঘটনায় প্রেমিক কর্তৃক একজন নাবালিকাকে গোপনে বিয়ে করারও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলা গ্রামের ৯নং ওয়ার্ডের আনসার হাওলাদারের বাড়িতে (প্রেমিক কাউসারের বাসা) এই অনশন শুরু করেন ঢাকার লালবাগ থানার বাবুবাজার এলাকার বাসিন্দা নাসিমা আক্তার (৪০)।
স্থানীয় সূত্র ও নাসিমার বক্তব্যে জানা গেছে, মো. কাউসার হোসেন (২৮) দীর্ঘ ছয় বছর ধরে নাসিমা আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক বজায় রেখে তাকে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে রাখেন । এ সময় তাকে শারীরিক ধর্ষন ও মানসিকভাবে নির্যাতন করারও অভিযোগ রয়েছে।
কিছুদিন আগে কাউসার নিজ গ্রামে ফিরে আসার পর হঠাৎ করেই নাসিমার সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। মর্মাহত হয়ে গত মাসে নাসিমা প্রথমবারের মতো বাউফলে এসে কাউসারের বাড়ির সামনে অনশন শুরু করেছিলেন। তখন বাউফল থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকায় তার পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেয়।
এই সময়ের মধ্যে কাউসার উপজেলার দশমিনার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ঢনডনিয়া গ্রামের সাইফুল ফকিরের নাবালিকা কন্যা লাবনী আক্তার (১৭) কে গোপনে বিয়ে করে ঢাকায় নিয়ে আত্মগোপনে থাকেন বলে স্থানীয়রা ও নাসিমার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
ঢাকায় ফিরে নাসিমা আইনের আশ্রয় নেন। তিনি পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে কাউসার হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়ের করার পর ৮ সেপ্টেম্বর সোমবার পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দেওয়ার পর তিনি আবারও বাউফলের শৌলা গ্রামে এসে প্রেমিক কাউসার হোসেনের বাড়িতে অনশনে বসেন। তিনি তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ন্যায়বিচার ও কাউসারের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তারা অনশনরত নাসিমার অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বাউফল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তারুজ্জামান সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গ্রাম্য এলাকায় এই ঘটনা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং সকলেই এই বিষয়টির দ্রুত ও ন্যায্য সমাধান কামনা করছেন।