মো: লালটু রহমান চুয়াডাঙ্গা জেলাপ্রতিনিধ :
দীর্ঘ প্রতীক্ষা ও আলোচনা-সমালোচনার পর চুয়াডাঙ্গা-১ (আলমডাঙ্গা-চুয়াডাঙ্গা সদর) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন পেলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরীফ। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে প্রথম ধাপে ২৩৭ প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করেন। সেই তালিকায় নাম আসে শরিফুজ্জামান শরীফেরও।
তৃণমূলের কর্মীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হওয়ায় ঘোষণার পরপরই চুয়াডাঙ্গা জেলা ও আলমডাঙ্গায় উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই মিষ্টি বিতরণ, শোভাযাত্রা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয় বিভিন্ন স্থানে।
সংগঠনিকভাবে দীর্ঘদিন মাঠে থাকা নেতা শরিফুজ্জামান শরীফ জেলা বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বলে মনে করেন স্থানীয় নেতারা। আন্দোলন, মানববন্ধন ও গণসংযোগে তার নেতৃত্ব প্রশংসিত হয়েছে সংগঠনজুড়ে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন জর্দার বলেন,
“প্রতিকূল সময়ে দলকে ধরে রেখেছেন শরিফুজ্জামান শরীফ। তার নেতৃত্বে এই আসনে বিএনপি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার অবস্থান তৈরি করবে।”
আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ওল্টু বলেন,
“ত্যাগী নেতার স্বীকৃতি এটা। তরুণ কর্মীরা নতুন উদ্দীপনা পেয়েছে।”
দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর দ্রুত মাঠপর্যায়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম সাজানো হচ্ছে। ভোটকেন্দ্রভিত্তিক কমিটি পুনর্গঠন, বাড়ি-ভিত্তিক প্রচারণা এবং ভোটার সংযোগে মনোযোগ দেবে বিএনপি। আগামী সপ্তাহ থেকেই আলমডাঙ্গায় গণসংযোগ শুরু করবেন শরিফুজ্জামান শরীফ।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,
“দীর্ঘ ১৬ বছর পর অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে। সংগঠিতভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং অংশীদার দলগুলোর সমন্বয়ে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।”
ঘোষিত তালিকায় শীর্ষ নেতাদের মধ্যে রয়েছেন:
বেগম খালেদা জিয়া — দিনাজপুর-৩ ও বগুড়া-৭
তারেক রহমান — বগুড়া-৬
মির্জা ফখরুল — ঠাকুরগাঁও-১
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু — সিরাজগঞ্জ-২
মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ — ভোলা-৩
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে ঐতিহ্যগতভাবে বিএনপি-আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে। শরিফুজ্জামান শরীফের মনোনয়নে বিএনপির তৃণমূল সংগঠন নতুন করে সক্রিয় হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। পোস্টার–ব্যানার, প্রচার অভিযান ও এলাকাভিত্তিক সভা-সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘদিন সাংগঠনিক রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা শরিফুজ্জামান শরীফ এই আসনে বিএনপিকে নতুনভাবে উজ্জীবিত করতে সক্ষম হতে পারেন। তবে চূড়ান্ত লড়াই কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়, তা নির্ভর করবে নির্বাচন ঘিরে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে শরিফুজ্জামান শরীফের মনোনয়ন কেবল ব্যক্তিগত স্বীকৃতি নয় — দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক তৎপরতা, ত্যাগ ও নেতৃত্বের স্বীকৃতি। এখন দৃষ্টি মাঠের দিকে — দীর্ঘ ১৬ বছরের রাজনৈতিক সমীকরণ পরিবর্তন করতে পারবেন কি তিনি? ভোটার ও রাজনৈতিক অঙ্গন এখন তাকিয়ে সেই উত্তরে।