নিজস্ব প্রতিবেদক,
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আবু হাসানের বিরুদ্ধে ভিজিএফ ও ভিডব্লিউবি’র চাল ওজনে কম দেওয়া এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সরকারি চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুযায়ী, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিটি বস্তায় ৩০ কেজি ৩০০ গ্রাম চাল সরবরাহ করার কথা থাকলেও আবু হাসান তা মানছেন না।
ভিজিএফ কর্মসূচি: ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বরাদ্দকৃত ২১৫.৩৭০ মেট্রিকটন চালে প্রতি বস্তায় ১ কেজি করে মোট ৭ হাজার ১৭৯ কেজি চাল কম দিয়েছেন তিনি।
ভিডব্লিউবি কর্মসূচি: প্রতি মাসে এই কর্মসূচির চাল থেকেও তিনি বস্তাপ্রতি ১ কেজি করে মোট ২ হাজার ৫৮৩ কেজি চাল সরিয়ে নিচ্ছেন।
আর্থিক ক্ষতি: সব মিলিয়ে ২৯২.৮৬ মেট্রিকটন চালে ওজনে কম দিয়ে তিনি সরকারি মূল্যে প্রায় ৪ লাখ ২৯ হাজার ৫২৮ টাকার চাল আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও প্রতিটি বস্তা সরবরাহের বিনিময়ে ১০ টাকা হারে অতিরিক্ত আরও ৯৭ হাজার ৬২০ টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক সদস্য জানান, গুদাম থেকে যে চাল সরবরাহ করা হয়, তা ওজন করলে বস্তাপ্রতি ২৮ থেকে ২৯ কেজির বেশি পাওয়া যায় না। প্রতিবাদ করেও কোনো সুরাহা মেলে না বরং প্রভাবশালী মহলের দোহাই দিয়ে তাদের মুখ বন্ধ রাখা হয়।
অনিয়ম ও দুর্নীতির পাশাপাশি আবু হাসানের বিরুদ্ধে স্থানীয় এক নারীর সাথে অবৈধ প্রেমের সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা দিয়ে তিনি প্রমোদ ভ্রমণে লিপ্ত থাকেন। এলাকার প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় তিনি এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যা নিয়ে বর্তমানে কলারোয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
চাল কম দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে গুদাম কর্মকর্তা আবু হাসান বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন—
"আমি নিয়ম মেনেই কাজ করছি। গুদামে শুকিয়ে যাওয়ার কারণে চালে কিছুটা ঘাটতি হতে পারে, তবে আমি কোনো চাল আত্মসাৎ করিনি।"
অন্যদিকে, নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান
"আমার বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য একটি মহল এসব প্রচার করছে।"